Showing posts with label শয়তানের ফাঁদ. Show all posts
Showing posts with label শয়তানের ফাঁদ. Show all posts

Monday, January 3, 2011

শয়তানের ফাঁদ

শয়তান বিভিন্ন পন্থায় তার কাজ চালিয়ে যায়। এমনকি অনেক মুসলিম শয়তানের মিত্র হিসেবে কাজ করছে অথচ তারা এ বিষয়ে সচেতন নয়। শয়তান এক গভীর ষড়যন্ত্রকারী। সকল খারাপ কাজই শয়তানের কুমন্ত্রণার ফসল। শয়তানের এসব খারাপ কাজ সম্পর্কে আল্লাহ্‌ ঠিকই অবহিত আছেন।  তাই আল্লাহ্‌ ও মুমিনদের কাছে এসব ষড়যন্ত্র খুবই দুর্বল: তোমরা জিহাদ করতে থাক শয়তানের পক্ষালম্বনকারীদের বিরুদ্ধে,(দেখবে) শয়তানের চক্রান্ত একান্তই দুর্বল।” (নিসা :৭৬) এখানে শয়তান কিভাবে মানুষকে বিপথে চালিত করে তা বর্ণিত হলো : ১. অনর্থক মতানৈক্য ও সন্দেহের উদ্রেক করার মাধ্যমে : রাসুল (সঃ) বলেন “বস্তুতপক্ষে শয়তান প্রকৃত মুমিনদেরকে তার পথে পরিচালিত করতে ব্যর্থ হবে… কিন্তু শয়তান তাদের মধ্যে মতানৈক্য ও বিরোধ সৃষ্টির পাঁয়তারা করবে।” [মুসলিম শরীফ]  অর্থাৎ শয়তান মুমিনদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টির চেষ্টা করবে এবং তাদেরকে একে অন্যের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দেবে যাতে তারা আল্লাহ্‌র স্মরণ হতে বিরত থাকে। এমনকি আমাদের মনে যে খারাপ চিন্তা ও সন্দেহের উদ্রেক হয় তা শয়তানেরই কাজ।  রাসূল (সঃ) এর স্ত্রী সাফিয়্যা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূল (সঃ) একবার ইতিকাফের সময় মসজিদে অবস্থান করছিলেন। আমি রাত্রিবেলা তাঁর সাথে দেখা করতে এসেছিলাম। কথা শেষ হলে আমি যখন বাড়ি ফিরব তখন রাসূল (সঃ) আমাকে এগিয়ে দেবার জন্য সঙ্গে আসলেন।  পথিমধ্যে দুজন আনসার আমাদের অতিক্রম করে গেল এবং রাসূল (সঃ) কে দেখার সাথে সাথে তারা দ্রুত চলতে লাগল। রাসূল (সঃ) তাদের ডেকে বললেন, ‘এদিকে এসো। আমার সাথে সাফিয়্যা বিনতে হুয়াই রয়েছেন।’ তখন তারা বলে উঠলেন: ‘হে রাসূলুল্লাহ্‌ (সঃ), আল্লাহ্‌ সকল সীমাবদ্ধতা হতে কতই না মুক্ত।’ তখন রাসূল (সঃ) বললেন ‘রক্ত যেমনভাবে শিরার মধ্য দিয়ে প্রবাহমান ঠিক তেমনিভাবে শয়তান মানুষের মাঝে প্রবাহমান। এবং আমার ভয় হল যে শয়তান হয়ত তোমাদের অন্তে্রে কোন কুমন্ত্রণা দেবে, ফলে এ নিয়ে বিভিন্ন কথা উঠবে।” [বুখারী] তাই এটা বাধ্যতামূলক যে, আমার সম্বন্ধে কোন ব্যক্তির যদি কোন ভ্রান্ত ধারণা থাকে তবে তা ভাঙ্গিয়ে দেয়া। শয়তানই মানুষের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণার, অমূলক চিন্তা- ভাবনার সৃষ্টি করে। সে মানুষকে অন্যের খারাপ চিন্তা , ধারণাসমূহ শুনতে উৎসাহ দেয় এবং তদনুযায়ী মনে খারাপ ধারণার সৃষ্টি করে। এমনকি প্রার্থনার সময় পর্যন্ত শয়তান মানুষকে রেহাই দেয় না। ঠিক মত ওযু করা হয়েছে কিনা, ঠিকমত সূরা পড়া হয়েছে কিনা ইত্যাদি ধারণা মনের মধ্যে সৃষ্টি করে ইবাদতে বিঘ্ন ঘটায়। তাই অনেকে ইবাদতের সময় কিছুটা অস্বস্তিতে ভোগে। ২. বিদাতকে উৎসাহিত করা : শয়তান এই বলে মানুষকে বিদাতে প্ররোচিত করে:  “এখনকার মানুষ দ্বীন হতে অনেক দূরে সরে গেছে এবং দ্বীনমুখী জীবনব্যবস্থাও তাদের কাছে কঠিন মনে হয়। তাই আমরা ধর্মে এমন নতুন কিছু কেন সংযোজন করছি না যার দ্বারা মানুষ আবার দ্বীনমুখী হয়।” শয়তান মানুষকে আরও বলে:  “আমরা কেন নতুন হাদীস তৈরি করছি না যার দ্বারা মানুষের অন্তেরে ভয় সৃষ্টি হয় এবং ধর্মমুখী জীবনব্যবস্থার প্রতি আগ্রহের সৃষ্টি হয়।”এর ফলে তারা নতুন নতুন হাদীস তৈরি করে এবং বলে যে: “আমরা রাসূল (সঃ) এর বিপক্ষে মিথ্যা বলছি না, বরং আমরা তাঁর পক্ষে মিথ্যা বলছি।”  তাই তারা নিজেদের মনগড়া কথা মতো জাহান্নাম ও জান্নাতের বর্ণনা দেয় এবং মনে করে এর দ্বারা তারা ভাল কাজ করছে। সুফিয়ান আস সাওরী (রঃ) বলেন: “শয়তান পাপ অপেক্ষা বিদাত অধিক পছন্দ করে। কারণ পাপ কাজ করলে অনুতপ্ত হবার সুযোগ থাকে। কিন্তু বিদাতে তা থাকে না। কারণ সে এটাকে ভাল কাজ বলে মনে করছে।” বিদাত হলো শয়তানের এক মোক্ষম অস্ত্র যার দ্বারা সে আমাদের দৈনন্দিন কার্যকলাপ ও বিশ্বাসের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। বিদাত পাপ কাজ হতেও ভয়ানক। কারণ এর দ্বারা পুরো ধর্মব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে এবং মুসলিমদের ঐক্য নষ্ট হয়। সাধারণত পাপ কাজের প্রভাব ব্যক্তির উপর পড়ে, ধর্মের ওপর পড়ে না। কিন্তু বিদাতের মাধ্যমে শয়তান মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় বিভাজন সৃষ্টি করছে যাদের প্রত্যেকেরই রয়েছে বিদাত পালনের বিভিন্ন মতভেদপূর্ণ ব্যবস্থা। বিদাতের মাধ্যমে শয়তান মুসলিমদের মধ্যে পারস্পরিক শত্রুতা ও বিভাজন সৃষ্টি করছে। শয়তান মানুষের কাছে সুন্নাহকে অপর্যাপ্ত বলে তুলে ধরে। মানুষকে সুন্নাহ্‌র ওপর চলতে ও ধৈর্য্য রাখতে বাধা দেয়। তাই মানুষ বিদাতের সূচনা করে যা মহানবী (সঃ) ও সাহাবীরা কখনোই করতে বলেননি বা করেননি। এই বিদাত অবলম্বনকারী ও অমান্যকারীদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিদাত অনুসরণই হয়ে ওঠে মানুষকে পছন্দ- অপছন্দের ভিত্তি। তাই এই ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে মুক্তির জন্য আমাদের জীবনের সকলক্ষেত্রে সুন্নাহ অনুসরণ করতে হবে। আল ইরবাদ ইবনে সারীয়া (রাঃ) হতে বর্ণিত: “রাসূল (সঃ) আমাদের সামনে এমন কিছু আলোচনা করলেন যার দ্বারা আমাদের অনর্ত ভয়ে পূর্ণ হয়ে গেল এবং আমাদের চোখ বেয়ে পানি পড়তে লাগল। তখন আমরা বললাম  ‘এটা আমাদের কাছে আপনার বিদায়ী ভাষণের ন্যায় মনে হচ্ছে। আমাদের কিছু উপদেশ দিন।’  তখন রাসূল (সঃ) বললেন: ‘আমি তোমাদের আল্লাহ্‌কে ভয় করতে নির্দেশ দিচ্ছি আর কোন দাসও যদি তোমাদের নেতা হয় তবুও তাকে তোমরা মান্য করবে। তোমাদের মধ্যে যারা দীর্ঘজীবী হবে তারা অনেক বিরোধপূর্ণ ব্যাপার দেখতে পাবে। তাই তোমরা আমার সুন্নাহ অক্ষত রাখবে এবং সঠিক পথে পরিচালিত খলীফাদের নির্দেশমত চলবে। বিদাত সম্পর্কে সাবধান!...

Read more ...