Sunday, April 8, 2012

কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন.........................

কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন............................

কেন নারী নেত্রীর কাজের মেয়েটি হচ্ছে নির্যাতিতা ?

কেন অচিকিৎসায় ধুকে মরে ডাক্তার পুত্রের পিতা ?

কেন সারা মাস খেটে স্কুল শিক্ষক বেতন পায়না তার ?

কেন ছয়-চার মেরে লাখ টাকা পায় সামান্য খেলোয়ার ?

কেন দুমাস যেতেই মহাসড়কের আস্তর যায় ফেটে ?

কেন মিছে মামলার ফাদে বেকুসুর মরবে হাজত খেটে ?

কেন রাজার ছেলেই রাজা হয়ে যায় পীরের ছেলেই পীর ?

কেন স্বার্থান্বেষী এনজিওগুলো এদেশেই করে ভিড় ?

কেন বিদেশী প্রভুর ইঙ্গিতে চলে এদেশের সরকার ?

কেন দাদারা গোপনে ওপারে পাঠায় এপারের রোজগার ? 

কেন কৃষকের ছেলে মন্ত্রি হয়েই বানাবে অট্টালিকা ?

আমার দেশের ঈমাম নিয়োগ দেবে কেন আমেরিকা ?

কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন ............................

কেন মসজিদ কমিটির সভাপতি ঘুষখোর-বেনামাজী ?

কেন এলাকার ত্রাস খুনি-লম্পট টাকার গরমে হাজী ?

কেন মিছে নবুয়ত দাবিদারদের মুসলিম হবে বলা ?

কেন ভিআইপিদের বহর থামাবে জনতার পথচলা ?

কেন মহাপন্ডিত রাজনৈতিকরা পায়না ঘরের ভোট ?

আবার সাড়ে দশজন নেতা মিলে হয় এগারো দলের জোট ?

কেন নাস্তিক-জোচ্চরদের ঘরে মদের আড্ডা বসে ?

কেন কলকাতা গিয়ে ইহাদের গালে তসলিমা চড় কষে ?

কেন ধর্মের সাথে গাদ্দরী করে মুরতাদ পায় ছাড় ?

কেন টকশোতে চলে জ্ঞান পাপীদের চলে অবাধ মিথ্যাচার ?

কেন জোরপূর্বক স্বীকারোক্তির জন্য অত্যাচার ?

কেন সুদি মহাজন শান্তিতে পাবে নোবেল পুরস্কার ?

কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন ............................

কেন বাংলা ভাষার দিনটিকে বলি একুশ ইংরেজীতে ?

কেন শিল্পের নামে মন্দ চর্চা চলছে এফডিসিতে ?

কেন মিনার-মাজার সৌধ বৃথাই দিবসের ফুল গোজা ?

কেন চেতনার নামে মানবমুর্তি-ভার্স্কযের পুজা ?

কেন বৃটিশ আইনে করছে বিচার বাংলাদেশের কাজী ?

আবার পাবলিক প্রেসে কেউবা করছে অযথাই বোমাবাজী ?

কেন বাংলাদেশের স্থপতী হবেন বাঙ্গালী জাতীর পিতা ?

কেন সংখ্যা বাড়িয়ে বলতেই হবে ত্রিশ লক্ষ বৃথা ?

কেন জাতীয়তা নিয়ে চলে বিতর্ক বাঙ্গালী-বাংলাদেশী ?

কেন বন্ধু না হয়ে প্রভু হতে চায় সীমানার প্রতিবেশী ?

কেন বাংলাদেশের জাতীয় কবি থাকতে মুসলমান, 

কেন রাষ্ট্রীয় সঙ্গীত হয়ে যায় অন্য কবির গান ?

কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন ............................

কেন ডিস কালচার উপহার দেবে অসভ্য এক জাতি ?

কেন বিদ্যার ব্যাগ হাটুতে ঝুলিয়ে ছাত্ররা মারে লাথি ?

কেন মদীনা, ছকীনা-করিমার গায়ে কারিনা কাপুর জামা ?

কেন রিত্তিক সেজে রফিক বাধায় অযথাই হাঙ্গামা ?

কেন সুন্দরী প্রতিযোগীতার নামে নারীকে পন্য কারা ?

কেন ফ্যাশানের নামে উগ্র নারীর উদ্ভট নড়াচরা ?

কেন টিভি পর্দায় বিজ্ঞাপনের বাড়তি তেলেসমাত ?

কেন পত্রিকা জুড়ে ফালতু মডেল নায়িকার উৎপাত ?

কেন বৈশাখ এলেই পাঞ্জাবী আর ইলিশ-পান্তাভাত ?

আবার নারী-মদ নিয়ে কাটে ইংরেজী নববর্ষের রাত ?

যদি মর্ডান যুগে তাসবি খতম তাবিজ-কবজ বাদ,

কেন মঙ্গলপ্রদীপ,তিলক-ঢোলক-রাখীর আর্শিবাদ ?

কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন ............................

যে প্রজাতন্ত্রে মুসলিম হল নব্বইভাগ প্রজা,

সেকুলার বলে পরিচয় দিতে লাগে কেন এত মজা ? 

যদি ধর্মের সাথে আধুনিকতার এতটাই সংঘাত,

কেন থিয়েটার উদ্বোধনের আগে কোরআনের তিলোওয়াত ?

কেন ভার্সিটি আর কলেজগুলোতে অস্ত্রগুদাম রেখে,

সরকার কাঁপে মাদ্রাসা পড়া মাওলানাদের দেখে ?

কেন মৌলবাদের অপবাদ সয়ে বাচঁবে মুসলমান ?

কেন সন্ত্রাস নামে অভিহিত হবে জিহাদের আহ্বান ?

যদি এদেশেই চলে পুজিঁবাদ আর কমিউনিজম প্রীতি,

তবে তাহাদের কেন এত বিষ লাগে ধর্মীয় রাজনীতি ?

যদি এদেশেই মেটে দিল্লি-মস্কো-ওয়াশিংটনের স্বাদ,

তবে মক্কার জ্যোতি মুহাম্মদের ইসলাম কেন বাদ ? 

কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন কেন............................


শিল্পী- মুহিব খান 
‎'কেন কেন কেন' এবং মুহিব খানের আরও ৩২ টি গান free download করতে visit করুন- 

http://allislamicbd.blogspot.com/p/blog-page.html

Read more ...

Saturday, April 7, 2012

একটি সহজ সরল মূল্যায়ন: কুরআন-সুন্নাহ থাকতে আবার আমরা মাযহাব কেন?

আজ এই মুহূর্তে আপনি ইসলাম গ্রহণ করলেন কিংবা আপনি জন্মগতভাবেই মুসলিম, এ মুহূর্তে আপনি ইসলামের কোনো বিধান পালন করতে চান, তো আপনাকে আলেম-উলামা বা ইসলাম সম্পর্কে জানেন-এমন ব্যক্তির শরণাপন্ন হতে হবে। আমাদের এই ভূখন্ডে প্রথম দিকে যারা ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন তারা ঈমান শিখেছিলেন ইসলাম-প্রচারকদের কাছে। এরপর তাদের কাছেই নামায আদায় করতে শিখেছিলেন। আজ এবং অনাগত দিনেও পৃথিবীব্যাপী প্রতিটি নওমুসলিমই ঈমান, অযু-গোসল, হালাল-হারাম, সালাত-যাকাত, সিয়াম-হজ্ব ইত্যাদির প্রথম ধারণা লাভ করবেন তার ইসলাম গ্রহণের প্রথম মাধ্যম ব্যক্তিটির কাছ থেকে এবং বহু কিছু তিনি শিখে নিবেন মুসলিমসমাজের ধর্মীয় কার্যক্রম ও কালচার থেকে। এ বিষয়টি আমরা খুব সহজেই বুঝতে পারব যদি কল্পনা করি সে সময়টির কথা, যখন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এত উন্নত হয়নি। শিক্ষা-দীক্ষার হার ছিল প্রায় শূন্যের কোঠায়। তথ্য ও যোগাযোগ মাধ্যম বলতে তেমন কিছুই ছিল না। ছিল না এত বই-পুস্তক, পত্রিকা ও প্রকাশনা। তখন ভাবের আদান-প্রদান ও যোগাযোগের একটিই উপায় ছিল। তা হল মৌখিক জ্ঞান বিনিময়ের পাশাপাশি বাস্তব অনুশীলন। অর্থাৎ হাতে-কলমে শিক্ষা দেওয়া।

আজকের এই সময়টা নিয়েই ভাবুন। দেখবেন, বাংলাদেশের মুসলমানরা ইসলামী বিশ্বাস, চিন্তা-চেতনা, ইবাদত-বন্দেগী, সুন্নত-বিদআত, জায়েয-নাজায়েয, হালাল-হারাম প্রভৃতি যা কিছুই জানেন এর সিংহভাগই সমাজ, পরিবেশ, গৃহশিক্ষক, মসজিদের ইমাম, ওয়ায়েজ, মক্তবের উস্তাদ, মা-বাবা, দাদা-দাদী ইত্যাদি মানুষ থেকে শেখা। কেবল নিজের পড়াশোনা, প্রচারমাধ্যম বা অন্যান্য ব্যক্তিগত অনুসন্ধান থেকে ধর্মীয় জ্ঞান লাভ করেছেন এমন মানুষের সংখ্যা এ দেশে এখনও অনেক কম।

আমাদের সমাজের প্রকট বাস্তবতার আলোকেই বাঙ্গালী মুসলমানের প্রথম ইসলামী জ্ঞান অর্জনের এ ব্যবস্থাকে অবলম্বন করেই প্রবচন চালু হয়েছে-শুইন্যা মুসলমান। অর্থাৎ মূল উৎস ঘেঁটে, দেখে বা পড়ে নয়, শুনে শুনে যারা একটি বিশ্বাস ও সংস্কৃতিকে ধারণ করেছে এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রেই এ প্রবচনটি প্রয়োগ করে থাকেন গ্রাম-বাংলার মানুষ।

কেবল বই-পুস্তক পড়ে একটা কাজ শেখা আর একজন শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে হাতে-কলমে শিক্ষালাভ করার মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ আছে। কোনো খেলা, ব্যায়াম, সাইকেল বা গাড়ি চালনা কোনোটাই শুধু বই-পুস্তক পড়ে, মিডিয়ায় ছবি দেখে পূর্ণরূপে শিখে নেওয়া সহজ নয়। একজন উস্তাদের সাথে থেকে তার ইনস্ট্রাকশন মেনে বিষয়টি শিখলে এবং হাতে-কলমে অনুশীলন করলে পুঁথিগত জ্ঞান বা তাত্ত্বিক ব্যাকরণ ততটা না জানলেও কাঙ্খিত কার্যক্রমটুকু শিখে নেওয়া সম্ভব। পড়াশোনার বিষয়টি ব্যবহারিক পর্যায়ে থাকলেও কাজ বাধাগ্রস্ত হবে না। গভীর তত্ত্ব আলোচনা ও সামগ্রিক জ্ঞান অনুসন্ধান বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গের জন্য জরুরি হলেও বিশ্বাস, দর্শন ও জীবনব্যবস্থার সাধারণ অনুসারীর প্রাথমিক শিক্ষার জন্য ওই প্রশিক্ষক, গুরু, পীর, উস্তাদ, মুর্শিদ, আলেম, ইমাম বা প্রচারকের সান্নিধ্যই যথেষ্ট।

বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম ও আল্লাহর মনোনীত একমাত্র দ্বীন ইসলামের প্রচার তত্ত্বের চেয়ে ব্যবহারিক পর্যায়েই বেশি অগ্রসর হয়েছে। কেননা, পৃথিবীর সকল অঞ্চলের সকল যোগ্যতার মানুষকে তাওহীদ, রিসালত ও আখেরাতের ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত জীবনব্যবস্থার দিকে দাওয়াত দিতে চাইলে কোনো কঠিন ও জটিল পন্থা অবলম্বন করা চলবে না। হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম রা.-এর সরল ও সনাতন পন্থায়ই তা করতে হবে।

হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে জীবনের প্রতিটি বিষয় হাতে-কলমে শিক্ষা দিয়েছেন, কোনো বই-পুস্তক ধরিয়ে দিয়ে গবেষণা করে বুঝে নিতে বলেই দায়িত্ব শেষ করেননি। পৃথিবীর অপরাপর এলাকায় বসবাসরত সমকালীন মানুষ এবং পরবর্তী সকল যুগের অনাগত বিশ্বমানবমন্ডলীর কাছে নিজের দাওয়াত পৌঁছে দিতেও হযরত বই-পুস্তক, পত্র-পত্রিকা, পান্ডুলিপি ইত্যাদির আশ্রয় নেননি। তিনি তাঁর সাহাবীগণকে দায়িত্ব দিয়েছেন বিশ্বময় ছড়িয়ে পড় এবং আমার আদর্শের একটি বাণী হলেও পূর্ব-পশ্চিমে বসবাসরত প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দাও।

হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেমন বলতেন, তোমরা আমাকে যেভাবে নামায পড়তে দেখ সেভাবে নামায পড়, সাহাবীরা যেমন নতুন কোনো মানুষকে অযু শেখানোর সময় তাদের সামনে বসে অযু করতেন এবং বলতেন, এই ছিল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অযু। ইসলামের প্রতিটি বিধানই প্রাথমিকভাবে এর ধারক-বাহকদের মাধ্যমে ব্যবহারিক তথা প্রায়োগিকভাবেই বিস্তৃত ও প্রচলিত হয়েছে। আর ইসলামের সৌন্দর্য ও শ্রেষ্ঠত্ব বা এর অন্তর্নিহিত শক্তিও এখানেই যে, এটি ধারণ বা পালন না করে বহন করা যায় না। আর একে ভালো না বেসে ধারণও করা যায় না। যারা একে ভালবাসেন ও নিজেরা ধারণ করেন, তারাই কেবল একে অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারেন। এর আনুষ্ঠানিক প্রচারের তুলনায় এর ধারক ও সেবকদের আন্তরিকতা ও কল্যাণকামিতার মাধ্যমেই ইসলাম অধিক, ব্যাপক, গভীর আর টেকসই পর্যায়ে বিস্তৃত হয়েছে। দেড় হাজার বছরের ইতিহাসই এর সপক্ষে প্রমাণ হিসেবে যথেষ্ট।

এখন ইসলামের একজন অনুসারী হিসেবে আমি নিজেকে নিয়েই চিন্তা করি। ইসলামের একজন প্রচারক যখন আমার কাছে ইসলামের আদর্শ তুলে ধরবেন, সে সময়টা যদি হয় আরও ২, ৪, ৫, ৭ শ বছর আগের, তখন কি তার পক্ষে সম্ভব আমার হাতে এক কপি কুরআন বা সহীহ হাদীসের একটি পূর্ণাঙ্গ সংকলন তুলে দেওয়া? বাংলাভাষী হওয়ায় আমার পক্ষে কী আরবী ভাষায় তা পাঠ করাও সম্ভব? শুধু আরবী ভাষা বলেই কথা নয়, আমার পক্ষে কি তাত্ত্বিক এ দুটো উৎস-বিদ্যার বিষয়গত ভাব উদ্ধার করাও সম্ভব? এখানে আমার জ্ঞান-গরিমার পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক অবস্থা, বোধ-বিবেকের পরিমাণও একটি প্রশ্ন। এরপর বহু সাধনা করে কুরআন-সুন্নাহর ভান্ডার হাতে পেয়ে গবেষণা করে এর সারনির্যাস হাসিল করে নিজে ঈমান, আমল ও আখলাক চর্চা শুরু করতে আমার কত মাস, বছর বা যুগ লাগবে সেটাও কি কম বড় প্রশ্ন ? এতটা পরিশ্রম করে যদি ইসলাম পালন আমি শুরু করি, তাহলেও তো ভালো। কিন্তু এ কাজটুকু কজন মানুষের পক্ষে সহজ বা সম্ভব? তদুপরি প্রশ্ন দেখা দেবে যে, কুরআন-সুন্নাহ গবেষণা করে ঈমান-আমল, নামায-রোযা, হজ্ব-যাকাত, বিয়ে-শাদি, ব্যবসা-বাণিজ্য, ঋণ-উৎপাদন, দান-খয়রাত, জীবন-মৃত্যু, জানাযা-উত্তরাধিকার ইত্যাদি শুরু করার আগ পর্যন্ত আমার মুসলমানিত্বের এ দীর্ঘ সময়ের নামায-বন্দেগী ও কাজকর্মের কী হবে?
আমার তো মনে হয়, কোনো ব্যক্তি বা জনগোষ্ঠীর ঈমান ও আমলের জন্য, ইসলামী জীবনবোধ ও সংস্কৃতি চর্চার জন্য প্রথম দিনই কুরআন ও সুন্নাহ গবেষণা শুরু করার পদ্বতি ইসলামের স্বাভাবিক রীতি নয়। যদি এই না হবে তাহলে আমার সন্তানকে আমি ঈমান শেখাব কী করে? তাকে নামায, যিকর, সবর, শোকর, তাওয়াক্কুল ও আদব-আখলাক আমি কোন অধিকারে শিক্ষা দেব? যদি সে প্রশ্ন তোলে, আববু! তুমি আমাকে কুরআন ও সুন্নাহ শেখাও কেন? কুরআন-সুন্নাহ থেকে আমিই আমার জীবনবিধান খুঁজে নেব। তুমি এর মধ্যে এসো না। তুমি তোমার প্রায়োগিক আচরণ ও পর্যবেক্ষণ আমার ওপর চাপাতে চেষ্টা করো না। আমি তোমার বা তোমাদের মাযহাব মানি না। আমার দায়িত্ব তো কুরআন-সুন্নাহর ওপর আমল করা। অতএব কুরআন-সুন্নাহর ওপর দখল স্থাপন করার সময় আমাকে দাও। এরপরই আমি শরীয়তের ওপর আমল শুরু করব। পুত্রের এসব যুক্তির পর আমার বলার কি কিছু থাকবে?
পুত্রের এ বক্তব্য যে ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত সে ভিত্তিই আমাকে কথা বলার সুযোগ দেবে। কারণ মহান আল্লাহ তাঁর দ্বীনের প্রচার ও শিক্ষাকে যে সনাতন ও স্বাভাবিক পদ্ধতিতে প্রচলিত ও বিস্তৃত করেছেন, এর সম্পূর্ণ অনুরূপ হচ্ছে আমার এ উদ্যোগ।

আমার পুত্রকে ইসলামী জীবন-বিধান শিক্ষা দেওয়া আমার ওপর শরীয়তের নির্দেশ। আমি তাকে আল্লাহর পরিচয়, আল্লাহর শক্তি, প্রীতি, ভীতি ও ভালবাসা শেখাব। তাকে হযরত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মহত্ত্ব, অবস্থান ও অপরিহার্যতা সম্পর্কে ধারণা দেব। তাকে নামায শেখাব। খাওয়া-পরা, ঘুম-বিশ্রাম, প্রস্রাব-পায়খানা, প্রবেশ-প্রস্থান, মসজিদে যাতায়াত, আযানের জবাব, হাঁটা-চলা, সালাম, মোসাফাহা ইত্যাদির ইসলামী নিয়ম শিক্ষা দেব। আমি নিজেও অযু-গোসল, রোযা-নামায, দাম্পত্য জীবন, পারিবারিক ও সামাজিক জীবন, হজ্ব-কুরবানী প্রভৃতি যথাযথ নিয়মে পালন করব। অথচ আমি কুরআন বা হাদীস পড়ার বা বুঝার মতো যোগ্যতা রাখি না। জ্ঞানের এ দুই মহাসমুদ্র পাড়ি দিয়ে আমার দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় বিধি-বিধান হস্তগত করে আমল করার মতো শিক্ষা, মেধা, মানসিক যোগ্যতা বা সামগ্রিক অবস্থা আমার নেই, এমতাবস্থায় আমার কী করণীয়?

আমার তো মনে হয়, এখানে আমার ও আমার পুত্রের একই ধরনের করণীয়, যা ইসলামের ১৫০ কোটি সমসাময়িক অনুসারীর প্রত্যেকেরই করণীয়। আর তা হল, কুরআন-সুন্নাহ ও ইজমা-কিয়াস থেকে গৃহীত ইসলামী বিধিবিধানের প্রায়োগিক রূপ ফিকহের অনুসরণ। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেমন বলেছেন, একজন ফকীহ শয়তানের মোকাবেলায় এক হাজার আবেদেরও চেয়েও শক্তিশালী। এর কারণ সম্ভবত এটিও যে, এক হাজার সাধারণ মুসলিমকে ধর্মীয় বিষয়াদি নিয়ে সংশয় উদ্বেগ ও বিভ্রান্তিতে ফেলে দেওয়া শয়তানের জন্য যত না কঠিন একজনমাত্র শরীয়ত-বিশেষজ্ঞ ফকীহ আলেমকে বিভ্রান্ত করা এরচেয়ে বেশি কঠিন। কেননা, এই ব্যক্তির কাছে কুরআন ও সুন্নাহর শক্তিশালী সম্পদ রয়েছে। রয়েছে ইলমে দ্বীনের আরও বিস্তারিত ভান্ডার।

কুরআন মজীদেও আল্লাহ তাআলা এ মর্মে বলেছেন, প্রত্যেক জনগোষ্ঠীর মধ্য হতে একদল মানুষ যেন দ্বীনী ইলমের উপর ব্যুৎপত্তি অর্জন করে কারণ জনগোষ্ঠীর বাকি অংশটিকে তাদের শরীয়তের উপর পরিচালনা করতে হবে। এখানেও আমরা ফকীহ বা শরীয়তের আলেমের বিধিগত অস্তিত্ব এবং তাঁর কুরআনী দায়িত্ব উপলব্ধি করতে পারি।

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মহামান্য সাহাবীগণের পৃথিবী থেকে চলে যাওয়ার পর ইসলাম যখন আরব-উপদ্বীপ ছেড়ে একদিকে সাহারা গোবি ছুঁয়ে দূর অতলান্তিক স্পর্শ করছিল, অপরদিকে আসমুদ্র সাইবেরিয়া আর মহাচীনের প্রাচীর পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছিল তখনও কিন্তু পবিত্র কুরআন ব্যাপকভাবে হস্তলিখিত হয়ে এত বিপুল পরিমাণ অনুলিপি তৈরি হয়নি, যা প্রতিটি শিক্ষিত নও-মুসলিমের হাতে তুলে দেওয়া যায়। আর হাদীস শরীফ তো তখনও যাচাই বাছাইয়ের পর সংকলিত ও গ্রন্থবদ্ধ হয়েও শেষ হয়নি। তো ইসলামের এ অগ্রযাত্রা, ইসলামী শরীয়তের আলোয় প্লাবিত এ নতুন পৃথিবীর বুকে কাদের মাধ্যমে কুরআন-সুন্নাহর আলো প্রতিবিম্বিত হয়েছিল? এর ছোট এক টুকরো জবাবই ইসলামের ইতিহাসে সুরক্ষিত আছে, যা আমি এ লেখার শুরুতে নিবেদন করেছি। হাদীস শরীফে তো বলা হয়েছে, তোমাদের মাঝে দুটি বিষয় আমি রেখে গেলাম। যতদিন তোমরা এ দুটো আঁকড়ে রাখবে ততদিন পথচ্যুত হবে না। এক আল্লাহর কিতাব। দুই. আমার আদর্শ। এ মহা দিকনির্দেশনার আরও সুসংহত রূপ হচ্ছে হযরতের অপর বাণী, যেখানে মুসলিম জাতিকে সত্যপথের দিশা দিতে গিয়ে বলেছেন, যে আদর্শের উপর আমি রয়েছি আর আমার সাহাবীগণ রয়েছেন। অন্যত্র বলেছেন, তোমাদের জন্য অবধারিত করছি আমার এবং খোলাফায়ে রাশেদীনের আদর্শের অনুসরণ।

এখানে আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি যে, ইসলামী অগ্রযাত্রা ও ইসলামী জীবনসাধনার সঠিক দিকনির্দেশের জন্য কুরআন ও সুন্নাহকে মূল উৎস সাব্যস্ত করা হয়েছে। ইসলামী জীবনব্যবস্থার আদর্শ ও মাপকাঠিরূপে অভিহিত করা হয়েছে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সহচরবৃন্দের অনুসৃত পথ, যা প্রধানতই ব্যবহারিক ও সান্নিধ্যগত আদর্শ। বই-পুস্তক ও তত্ত্ব প্রধান নয়। যে জন্য সাহাবায়ে কেরামের মূল সময়কালের শেষ পর্যায়ে আমরা পবিত্র মদীনা মুনাওয়ারায় হযরত মালেক ইবনে আনাসকে রাহ. দেখতে পাই গোটা মুসলিমসমাজের লোকশিক্ষক ও দিকনির্দেশক হিসেবে। ইসলামের উপর আমল করার জন্য মদীনাবাসী তখন থেকেই কুরআন ও সুন্নাহ নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে গবেষণা বা অনুসন্ধান শুরু না করে ফকীহ ও আলেম ইমাম মালেকের ফিকাহ বা মাযহাবের উপর, তার নির্বাচন ও পর্যবেক্ষণের উপর নিশ্চিন্তে নির্ভর করেছেন। এরও বহু আগে থেকে মক্কাবাসীরা নির্ভর করেছেন হযরত ইবনে আববাস রা.-এর উপর। এর কিছুদিন পর থেকে বৃহত্তর ইরাকবাসী ইমামে আজমের ফিকহের উপর। আর এটিই কুরআন ও সুন্নাহর বিধান। আল্লাহ তাআলা যেমন বলেছেন, তোমরা অনুসরণ কর আল্লাহর ও তাঁর রাসূলের। আর অনুসরণ কর তোমাদের উলুল আমর বা শরীয়তী অথরিটির। হাদীস শরীফে বলা হয়েছে, পিতার সন্তুষ্টিতেই রয়েছে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি। তো আমার পুত্রকে দৈনন্দিন জীবনের যে শরীয়ত সম্পর্কিত শিক্ষা-দীক্ষা আমি দেব তা তৎক্ষণাৎ গ্রহণ করা ও তার উপর আমল করাও পুত্রের উপর শরীয়তেরই নির্দেশ। এখানে আমাদের মধ্যকার এ আদান-প্রদান কিছুতেই কুরআন-সুন্নাহ বিবর্জিত বা বিরোধী নয়।

মুসলিমজাতির হাতে তাদের শরীয়তের ব্যবহারিক রূপরেখা সমন্বিত ও সংকলিত আকারে তুলে দেওয়ার জন্য মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নির্দেশে যেসব সাহাবী, তাবেয়ী ও পরবর্তী যুগের ফকীহগণ কঠোর জ্ঞান-গবেষণা ও সাধনা করেছেন তাদের মর্যাদা বা গুরুত্ব নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা এখানে সম্ভব নয়, একখানা উদ্ধৃতি উল্লেখ করাই বিষয়টির মাহাত্ম্য উপলব্ধি করার জন্য যথেষ্ট মনে হয়। হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একজন বিখ্যাত সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, রাতের কিছু সময় ইলম চর্চা করা রাতভর নফল ইবাদতের চেয়েও উত্তম।

কুরআন-সুন্নাহর ভেতর মানবজীবনের উদ্ভূত যে কোনো সমস্যার সমাধান পেয়ে গেলে এ থেকেই আমাদের তা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় কুরআন-সুন্নাহর আলোকে সমাধানে পৌঁছার জন্য নিজের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও বিবেচনার আশ্রয় নিতে হবে। এটি হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামেরই আদর্শ। হযরত মুআয ইবনে জাবাল রা.কে ইয়েমেনে পাঠানোর সময় তার মুখ থেকে এ কথা শুনতে পেয়ে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুশি হয়ে আল্লাহর শোকর গোযারি করেছিলেন।

ইসলাম পৃথিবীর সর্বকালের সকল মানুষের জন্য চিরস্থায়ী জীবনব্যবস্থারূপে কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াস প্রভৃতির মূলনীতির ভিত্তিতে ফকীহ ও মুজতাহিদ সাহাবীগণের মাধ্যমে ব্যবহারিক বিধানরূপে, সমস্যার সমাধানরূপে, বিচারালয়ে ফয়সালারূপে জীবনের প্রতিটি অঙ্গনে অতুলনীয় ব্যবস্থারূপে তার ব্যাপক আকার পরিগ্রহ করতে থাকে। ব্যবহারিক জীবনে ইসলামের নানা বিধানে কিছু বৈচিত্র ইসলামের বিশালত্ব ব্যাপ্তি ও কালজয়ী গুণেরই বহিঃপ্রকাশ। অসংখ্য বিষয়ে সাহাবায়ে কেরামের পর্যবেক্ষণে ছিল অনেক মতবৈচিত্র! এ ইসলামের এক স্বীকৃত রীতি। প্রায়োগিক বিধানের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ তথা বিস্তারিত ফিকহ রচনার সময়ও মুজতাহিদ আলেমগণের পর্যবেক্ষণ, উপলব্ধি ও নির্বাচনে এ ধরনের বৈচিত্র ফুটে ওঠে। শরীয়তে চিন্তার এ বৈচিত্রকে উৎসাহিত করা হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে মূল কথা হচ্ছে কুরআন মজীদ, সুন্নাহ, প্রথম যুগের প্রচলন, সাহাবীদের ঐকমত্য আর পূর্ববর্তী নজির অনুসরণ। এসব মূলনীতি বিশ্লেষণ করেই আপেক্ষিক বিষয়ের মধ্যে একটিকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। আর এ ইজতিহাদী তত্ত্বের ভিত্তিতেই গড়ে ওঠেছে ইসলামের বহুমাযহাব সম্বলিত ব্যবহারিক ফিকহ।

কুরআন-সুন্নাহ ও এর প্রাসঙ্গিক সকল বিষয় যে সুযোগ্য ব্যক্তির নখদর্পণে, মুসলিম জাতির প্রয়োজনে তিনিই পারেন ইজতিহাদ করতে। কেননা, সাহাবায়ে কেরামের মতবৈচিত্রপূর্ণ কোনো বিষয় কিংবা সাহাবীদের যুগের পরবর্তী কোনো নতুন সমস্যার সমাধান নির্বাচন ও পর্যবেক্ষণ ছাড়া কার্যকর করা সম্ভব ছিল না। ফলে অসংখ্য মত ও মাযহাবের বৈচিত্র ছিল খুবই স্বাভাবিক, যার মধ্যে অপেক্ষাকৃত প্রসিদ্ধ চারটি মাযহাবের সাথে মুসলিম জনসাধারণ সমধিক পরিচিত। এসব মাযহাবের কোনোটিই কুরআন-সুন্নাহ বহির্ভূত নয় এবং কোনোটিই এমন নয়, যার অনুসরণ করলে আমরা কুরআন-সুন্নাহর অনুসারী বলে গণ্য হব না। এমনকি একটি মাযহাবের ইমাম অপর মাযহাবের ইমামের এলাকায় বেড়াতে গিয়ে তার ফিকহ অনুসারেই আমল করেছেন এমন উদাহরণও ইমামদের জীবনে দেখা যায়। যেন আমরা বুঝতে সক্ষম হই যে, মাযহাব কেবলই নির্বাচন ও পর্যবেক্ষণের বিষয়।

কুরআন-সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াসের সমন্বয়ে প্রাপ্ত সিদ্ধান্তের বহুমাত্রিকতা থেকে একটি অবস্থাকে প্রাধান্য দেওয়ার নাম তারজীহ। আর এ প্রাধান্যপ্রাপ্ত সমাধানগুলোই হচ্ছে মাযহাবের বৈচিত্রপূর্ণ অংশ। অতএব মাযহাব মানা আর কুরআন-সুন্নাহ মানার মধ্যে কোনোই ফারাক থাকার কথা নয়। তাছাড়া সাধারণ মুসলমানের পক্ষে কোনো আংশিক বা সামগ্রিক, প্রসিদ্ধ কিংবা অখ্যাত মাযহাব অনুসরণ ছাড়া শরীয়তের উপর আমল করাও প্রায় অসম্ভব।
কেননা, ইসলামের বিশালত্ব, চিরস্থায়িত্ব ও সর্বকালের সকল অঞ্চলের মানুষের উপযোগী ধর্ম ও জীবনব্যবস্থা হিসেবে এর ভেতরকার সবকিছুই পরম উদার ও বৈজ্ঞানিক। এতে অনেক সুযোগ, উদারতা ও বিস্তৃতি রয়েছে। জীবন ও জগতকে গতিশীল উপায়ে এগিয়ে নেওয়া ইসলামের প্রেরণা। সুতরাং এখানে প্রায় সব বিষয়েই অনেক এখতিয়ার, অনেক সহজতা। ইসলামের মূল ইবাদত নামাযের ভেতর যত বৈচিত্র ও সহজতা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জীবন থেকে হাদীসের মারফত আমরা পাই, এর সবগুলোর উপরই আমাদের আমল করার বৈধতা ও যুক্তি রয়েছে। এতে একজন বিজ্ঞ মুজতাহিদ যখন একটি নামায পদ্ধতি আমাদের জন্য কুরআন-সুন্নাহ, ইজমা, কিয়াস-এর আলোকে নির্বাচন করবেন, তখন সেটাই এক এলাকার, এক সংস্কৃতির মানুষকে ধারণ করতে হবে। এ পদ্ধতির চর্চাই পরস্পরগতভাবে প্রজন্মান্তরে চলতে থাকবে। শুধু নামায নয়, যাকাত, হজ্ব, কুরবানী, পাক-নাপাক, হালাল-হারাম, জায়েয-নাজায়েযের প্রতি ক্ষেত্রেই এভাবে মাযহাবের প্রয়োজনীয়তা মুসলিমজাতি উপলব্ধি করবে। সর্বোপরি সকল মাযহাবের ইমামদের অভিন্ন একটি কৈফিয়ত ইসলামে রয়েছে যে, আমার নির্বাচিত মাসআলার বিপরীতে যদি আরও শক্তিশালী প্রমাণ খুঁজে পাও তাহলে আমার মাসআলা ত্যাগ কর। বিশুদ্ধ হাদীস যদি আমার সিলেকশনকে চ্যালেঞ্জ করে তাহলে আমার কথাকে ছুঁড়ে ফেলে দাও। এখানে অবশ্য একজন মুজতাহিদের নির্বাচনকে যাচাই করার জন্যও ন্যূনতম কিছু যোগ্যতার প্রয়োজন। সাধারণ একজন দর্শক, শ্রোতা বা পাঠকের পক্ষে এক্ষেত্রে নাক গলানো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ও অসঙ্গত।

যদি কোনো ব্যক্তি নিজেই শরীয়তের সকল শর্ত পূরণ করা একজন মুজতাহিদ হন তাহলে তিনি কোনো ইমামের মাযহাব অনুসরণ না করে নিজেই কুরআন-সুন্নাহর আলোকে জীবনযাপন করতে পারেন। তবে কুরআন-হাদীসের অনেক শাস্ত্রবিদ মনীষীও এ ধরনের ঝুঁকি নিতে চাননি। কেননা, বিষয়টি শরীয়তের এক বা দুই শাস্ত্রের মাঝে সীমাবদ্ধ নয়, কুরআন ও হাদীস সংক্রান্ত সকল মৌলিক শাস্ত্রে গভীর বুৎপত্তির অধিকারী হয়ে নিজেকে নতুন পথের পন্থী দাবি করা চাট্টিখানি কথা নয়।

অতএব নির্দ্ধিধায় আমরা স্বীকৃত মাযহাবগুলোর উপর আমল করতে পারি। কর্মসূচিগত ও সামাজিক শৃঙ্খলার জন্য যেকোনো একটি মাযহাবকে বেছে নেওয়া জরুরি। যেমন, একটি বহুতল ভবনে ওঠার জন্য যদি সিঁড়ি, এসকেলেটর, লিফট, ক্রেন, রশি প্রভৃতি উপায় থাকে তাহলে একই সঙ্গে একাধিক উপায় অবলম্বন করা শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ বলে বিবেচিত। একটি পন্থাই বেছে নিতে হবে আমাকে। তাছাড়া ধর্মীয় কার্যক্রমের ক্ষেত্রে একটি পন্থা অনুসারে আমল করা এজন্যও কর্তব্য যে, ইবাদত বা আচরণে অস্থিরতা এর আবেদনকে বহুলাংশে ক্ষুণ্ণ করে থাকে।

অতএব স্বাভাবিকভাবেই আমরা এ সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে, মাযহাব অনুসরণ করলে প্রকৃতপক্ষে আমি কুরআন-সুন্নাহই অনুসরণ করলাম। আমি তখন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত। আমি তখন আহলে কুরআন, আহলে হাদীস। আমিই তখন সালাফী বা পূর্ববর্তী মুরববীদের অনুসারী। কেননা, এসব পথের মূল প্রেরণা আর মাযহাব সংকলনের প্রেরণায় কোনোই বিরোধ নেই।

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে দ্বীনের সঠিক বোধ ও উপলব্ধি দান করুন, আমীন।

মাযহাব

Read more ...

Thursday, April 5, 2012

কবিরা গুনাহ


কাবীরা গুনাহ থেকে সতর্ক থাকুন


কাবীরা গুনাহের আভিধানিক অর্থ বড় গুনাহ আর শারী'আতের পরিভাষায় আল্লাহ ও তাঁর রসূল যে সকল কাজ করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন এবং সে সকল কাজের জন্য শাস্তির বিধান অথবা আল্লাহর রাগের কথা ঘোষণা রয়েছে, তাকে কাবীরা গুনাহ বলা হয়

গুনাহ দু'ভাগে বিভক্ত- প্রথমত কাবীরা; দ্বিতীয়ত সাগীরাকেউ কেউ বলেছেন, মূলত সব গুনাহই- গুনাহ, এর কোন বিভাগ নেইতবে মুহাক্কিক উলামায়ি কিরামের মতে গুনাহ দু'প্রকারসাগীরা গুনাহ ও কাবীরা গুনাহ
যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেছেনঃ
"যদি তোমরা গুরতর নিষিদ্ধ কর্ম হতে বিরত থাক, তবে তোমাদের লঘুতর পাপগুলো আমি মোচন করে দেব; আর তোমাদেরকে সম্মানিত স্থানে দাখিল করব।" (সূরা আন-নিসা-৩১)

কবীরা গুনাহসমূহের সংখ্যা
কুরআন ও হাদীসে কাবীরা গুনাহের পূর্ণ সংখ্যার বর্ণনা এক সাথে উল্লেখ নেইতবে কুরআনে ও হাদীসে যে সকল গুনাহকে কাবীরা গুনাহের অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে, উলামায়ি কিরাম এর সংখ্যা ৭০টি বলে বর্ণনা করেছেনআবার তাঁদের কেউ কেউ তার সংখ্যা এর চেয়ে অধিক বলেও উল্লেখ করেছেনএসকল কাবীরা গুনাহের মধ্যে কোনটি কোনটির চেয়ে অপেক্ষাকৃত অধিক গুরুতর

আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেনঃ এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সঃ)- কে জিজ্ঞেসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ তা'আলার নিকট সবচেয়ে বড় গুনাহ কোনটি? উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেন, তোমার সন্তান তোমার সাথে খাবে এ ভয়ে তাকে হত্যা করাতিনি আবার প্রশ্ন করলেন, তারপর কোনটি? রাসূলুল্লাহ (সঃ) জবাব দিলেন, প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া।"(বুখারী, আঃপ্রঃ, হাদীস নং- ৭০০১)

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ ৭টি ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে তোমরা দূরে থাকবেসাহাবীগণ জিজ্ঞেসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! সে ৭টি কাজ কি কি
তিনি বললেনঃ (১) আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা; (২) যাদু করা; (৩) শারী'আতের বিধান ছাড়া কোন ব্যক্তিকে হত্যা করা, যা আল্লাহ হারাম করেছেন; (৪) ইয়াতীমের মাল ভক্ষণ করা; (৫) সুদ খাওয়া; (৬) জিহাদের ময়দান থেকে পালায়ন করা; (৭) নিরাপরাধ ও পবিত্র মুসলিম মহিলাদের নামে যিনার অপবাদ রটানো। (বুখারী, মুসলিম হাঃ ১৭০ ইঃসেঃ)


কাবীরা গুনাহ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়ঃ

আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
"আপনি বলুন, হে বান্দাহরা! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ, আল্লাহর রহমাত হতে তোমরা নিরাশ হয়ো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের সব পাপ ক্ষমা করে দিবেন, তিনি পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।" (সূরা আযযুমার-৫৩)

মূলত একনিষ্ঠ তাওবাহর মাধ্যমে সকল গুনাহ থেকে মুক্তি লাভ করা যায় তবে এ জন্য চারটি শর্ত রয়েছেযেমন, (১) আন্তরিকভাবে খালিস নিয়্যতের সহিত অনুতপ্ত ও লজ্জিত হওয়া; (২) ভবিষ্যতে আর ঐ গুনাহ না করার ওয়াদাহ করা; (৩) অবিলম্বেউক্ত গুনাহ একেবারেই ত্যাগ করা; (৪) গুনাহর সাথে মানুষের অধিকার জড়িত থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যদি জীবিত থাকে তবে তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেয়া এবং প্রয়োজনে তাকে বা তার উত্তরাধিকারীদেরকে সন্তোষজনক ক্ষতিপূরণ দানএই চারটি শর্ত পালনপূর্বক ক্ষমা চাইলে আল্লাহ ক্ষমা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন

সাগীরা গুনাহ থেকেও সাবধান! 
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত; তিনি বলেন, হে লোকসকল! তোমরা এমন সমস্ত কাজ করে থাক যা তোমাদের দৃষ্টিতে চুলের চাইতেও সূক্ষ্ণঅথচ রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর সময়ে আমরা সেগুলোকে ধ্বংসাত্নক মনে করতাম। (বুখারী, মিশকাত হাঃ ৫১২৩)

আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, "রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, হে আয়িশাহ! তুমি ঐসব গুনাহ থেকে বেঁচে থাক যেগুলোকে ক্ষুদ্র ধারণা করা হয়কেননা, এ সমস্ত ছোট ছোট গুনাহগুলোর খোঁজ রাখার জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে (মালাইকা) নিয়োজিত রয়েছেন। (ইবনু মাজাহ, দারেমী ও বায়হাকী, মিশকাত হাঃ ৫১২৪)

কাবীরা গুনাহের বিবরণঃ
০১) শিরক বা আল্লাহর সাথে অংশী স্থাপন করা
০২) অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা
০৩) সালাত পরিত্যাগ করা
০৪) বিনা ওজরে রমাযানের সিয়াম পালন না করা
০৫) যাকাত আদায় না করা
০৬) সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হাজ্জ না করা
০৭) জিহাদের ময়দান থেকে পালায়ন করা
০৮) আত্মহত্যা করা
০৯) যিনা বা ব্যভিচার করা
১০) সুদের আদান প্রদান করা
১১) মাতা-পিতার নাফারমানী করা

১২) মদ পান করা বা নেশাদ্রব্য ব্যবহার
১৩) আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্ন করা
১৪) চুরি করা
১৫) ডাকাতি করা

১৬) যাদু টোনা করা

১৭) ইয়াতীমের মাল অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করা
১৮) ইমাম বা নেতা কর্তৃক প্রজাদের ধোঁকা দেয়া এবং তাদের উপর যুলম করা
১৯) অহংকার করা
২০) মিথ্যা স্বাক্ষ্য দেয়া
২১) জুয়া খেলা
২২) সমকামিতা বা পুরুষে পুরুষে বা মহিলা মহিলা যিনা (ব্যভিচার) করা
২৩) আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি মিথ্যারোপ করা
২৪) সত্বী নারীর বিরুদ্ধে অপবাদ দেয়া
২৫) রাষ্ট্রীয় সম্পদ (গানীমাতের মাল) আত্মসাৎ করা
২৬) রিয়া বা লোক দেখানো কাজ
২৭) দুনইয়ার উদ্দেশ্যে ইলম অর্জন এবং ইলম গোপন করা
২৮) খিয়ানত বা বিশ্বাঘাতকতা করা
২৯) মিথ্যা ক্বসম খাওয়া
৩০) মিথ্যা বলা
৩১) হারাম খাওয়া এবং হারাম উপার্জন করা
৩২) অন্যায় জরিমানা আদায় করা
৩৩) দুর্ণীতি পরায়ণ বিচারক
৩৪) ঘুষ আদান প্রদান
৩৫) নারীদের পুরুষের বেশ এবং পুরুষদের নারী বেশ ধারণ করা
৩৬) দাইয়ূস 
৩৭) হালালাকারী ও যার জন্য হিলা করা হয়
৩৮) প্রস্রাব থেকে বেঁচে না থাকা
৩৯) উপকার করে খোঁটা দেয়া
৪০) তাক্বদীরের প্রতি অবিশ্বাস করা
৪১) অন্য লোকদের গোপন কথা শুনা
৪২) চোগলখোরী করা 
৪৩) গীবত করা
৪৪) ওয়াদা করে তা রক্ষা না করা
৪৫) গণক বা জ্যোতির্ষীর কথা বিশ্বাস করা
৪৬) ফটো বা ছবি বানানো
৪৭) বিদ্রোহ ও ফ্যাসাদ সৃষ্টি করা
৪৮) যুলম অত্যাচার করা
৪৯) পায়ের টাখনুর নীচে কাপড় লটকিয়ে পরিধান করা
৫০) পুরুষের রেশমী বস্ত্র ও স্বর্ণালংকার পরিধান করা
৫১) যে পিতা নয় তাকে জেনে-শুনে পিতা বলে পরিচয় দেয়া
৫২) সত্যের বিরোধিতা করা অকারণে বিতর্ক ও ঝগড়া করা
৫৩) মাপে বা ওজনে কম দেয়া
৫৪) আল্লাহর দেয়া অবকাশকে নিরাপদ মনে করা
৫৫) আল্লাহর ওলীগণকে কষ্ট দেয়া
৫৬) বিনা ওযরে জামা'আত ত্যাগ করে একা সালাত আদায় করা
৫৭) ওযর ব্যতীত জুমু'আর জামা'আত ত্যাগ করা
৫৮) ওয়াসীয়্যাত দ্বারা অনিষ্ট করা
৫৯) প্রতারনা ও ধোঁকাবাজি করা
৬০) সাহাবীদের গালি দেয়া
৬১) প্রতিবেশীকে ক্ষ্ট দেয়া
৬২) মুসলিমদের ক্ষ্ট দেয়া
৬৩) আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো উদ্দেশ্যে যবেহ করা
৬৪) মুসলিমদের দোষ-ত্রুটি গোপনীয়তা অনুসন্ধান করা এবং ফাঁস করে দেয়া
৬৫) লা'নত বা অভিশাপ দেয়া
৬৬) আশু বিপদে অধৈর্য হওয়া
৬৭) ক্রীতদাসের পলায়ন
৬৮) দুর্বলের (দাস-দাসী) প্রতি কঠোর হওয়া
৬৯) প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি অন্যকে না দেয়া
৭০) আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া

Read more ...

Tuesday, July 19, 2011

বিষয় : কাপড় পরিধান


টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পড়ার ব্যাপারে ইসলাম কি বলে 


আবু যর রা. বলেন, রাসূল-সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম- বলেছেন, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তিন ব্যক্তির সাথে কথা তো বলবেনই না বরং তাদের দিকে তাকিয়েও দেখবেন না। এমনকি তিনি তাদেরকে গুনাহ থেকে পবিত্র করবেন না বরং তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি । আমি জিজ্ঞাসা করলাম, তারা কারা? তবে এরা তো ধ্বংশ, তাদের বাঁচার কোন রাস্তা নাই। রাসূল-সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম- এ কথা তিনবার বলেছেন। তারা হলঃ
১) যে ব্যক্তি টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে কাপড় পরে।
২) যে ব্যক্তি মিথ্যা কসম খেয়ে ব্যাবসার পণ্য বিক্রি করে।
৩) যে ব্যক্তি কারো উপকার করে আবার খোটা দেয়। (মুসলিম, তিরমিযী, আবু দাউদ ও ইবন মাজাহ্)।

আবু হুরায়রা নবী -সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম- থেকে বর্ণনা করে বলেন,লুঙ্গির যে অংশ টাখনুর নিচে থাকবে তা আগুনে প্রজ্জলিত হবে। (বুখারী)

জাবের ইবন সুলাইম রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন, টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে কাপড় পড়ার ব্যাপারে সাবধান হও। কারণ, তা অহংকারের অন্তর্ভূক্ত। আর আল্লাহ অহংকার করাকে পছন্দ করেন না। (আবু দাঊদ)।

ইবন বায এবং ইবন উছাইমীন (রাহ.) এর ফাতওয়াযে কোন অবস্থায় টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পড়াকে রাসূল সা. অহংকারের অর্ন্তভূক্ত বলেছেন। কারণ, তিনি বলেন, টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পড়া থেকে সাবধান! কারণ তা অহংকারের অন্তর্ভূক্ত। এখানে তিনি বিশেষ কোন অবস্থাকে বাদ দেন নি। সুতরাং যে ব্যক্তি ইচ্ছা করে টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে কাপড় পরবে সে এ শাস্তির আওতায় চলে আসবে। চাই তা পায়জামা হোক বা লুঙ্গি, কুর্তা বা অন্য কোন পোশাক। কোন পোশাকের ক্ষেত্রেই টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পড়ার সুযোগ নেই।

মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল উছাইমীন (রাহ.) বলেন, অহংকার বশতঃ যে ব্যক্তি লুঙ্গি টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পড়বে তার শাস্তি হল, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার সাথে কথা তো বলবেনই না বরং তার দিকে তাকিয়েও দেখবেন না। এমনকি তিনি তাকে গুনাহ থেকে পবিত্র করবেন না বরং তার জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি আর যদি অহংকার বশতঃ ঝুলিয়ে পরে তাবে তার শাস্তি হল, সে যতটুকু কাপড় টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পরেছিল ততটুকু আগুনে প্রজ্জলিত হবে।

(তথ্যসূত্রঃ ফাতওয়া আল বালাদুল হারাম, ১৫৪৭, ১৫৪৯, ১৫৫০ নং পৃষ্ঠা)

Read more ...

Friday, July 1, 2011

The 99 names of OUR CREATOR

1 Allah (الله) The Greatest Name
2 Ar-Rahman (الرحمن) The All-Compassionate
3 Ar-Rahim (الرحيم) The All-Merciful
4 Al-Malik (الملك) The Absolute Ruler
5 Al-Quddus (القدوس) The Pure One
6 As-Salam (السلام)
The Source of Peace
7 Al-Mu'min (المؤمن) The Inspirer of Faith
8 Al-Muhaymin (المهيمن)
The Guardian
9 Al-Aziz (العزيز) The Victorious
10 Al-Jabbar (الجبار) The Compeller
11 Al-Mutakabbir (المتكبر) The Greatest
12 Al-Khaliq (الخالق)
The Creator
13 Al-Bari' (البارئ)
The Maker of Order
14 Al-Musawwir (المصور) The Shaper of Beauty
15 Al-Ghaffar (الغفار) The Forgiving
16 Al-Qahhar (القهار) The Subduer
17 Al-Wahhab (الوهاب) The Giver of All
18 Ar-Razzaq (الرزاق) The Sustainer
19 Al-Fattah (الفتاح) The Opener
20 Al-`Alim (العليم) The Knower of All
21 Al-Qabid (القابض) The Constrictor
22 Al-Basit (الباسط) The Reliever
23 Al-Khafid (الخافض) The Abaser
24 Ar-Rafi (الرافع) The Exalter
25 Al-Mu'izz (المعز) The Bestower of Honors
26 Al-Mudhill (المذل) The Humiliator
27 As-Sami (السميع) The Hearer of All
28 Al-Basir (البصير)
The Seer of All
29 Al-Hakam (الحكم)
The Judge One
30 Al-`Adl (العدل) The Just
31 Al-Latif (اللطيف) The Subtle One
32 Al-Khabir (الخبير) The All-Aware
33 Al-Halim (الحليم) The Forbearing
34 Al-Azim (العظيم)
The Magnificent
35 Al-Ghafur (الغفور) The Forgiver and Hider of
Faults

36 Ash-Shakur (الشكور) The Rewarder of
Thankfulness

37 Al-Ali (العلى) The Highest
38 Al-Kabir (الكبير) The Greatest
39 Al-Hafiz (الحفيظ) The Preserver
40 Al-Muqit (المقيت) The Nourisher
41 Al-Hasib (الحسيب) The Accounter
42 Al-Jalil (الجليل)
The Mighty
43 Al-Karim (الكريم) The Generous
44 Ar-Raqib (الرقيب) The Watchful One
45 Al-Mujib (المجيب) The Responder to Prayer
46 Al-Wasi (الواسع) The All-Comprehending
47 Al-Hakim (الحكيم) The Perfectly Wise
48 Al-Wadud (الودود) The Loving One
49 Al-Majid (المجيد)
The Majestic One
50 Al-Ba'ith (الباعث) The Resurrector
51 Ash-Shahid (الشهيد)
The Witness
52 Al-Haqq (الحق) The Truth
53 Al-Wakil (الوكيل) The Trustee
54 Al-Qawiyy (القوى) The Possessor of All
Strength

55 Al-Matin (المتين) The Forceful One
56 Al-Waliyy (الولى) The Governor
57 Al-Hamid (الحميد) The Praised One
58 Al-Muhsi (المحصى) The Appraiser
59 Al-Mubdi' (المبدئ)
The Originator
60 Al-Mu'id (المعيد) The Restorer
61 Al-Muhyi (المحيى) The Giver of Life
62 Al-Mumit (المميت) The Taker of Life
63 Al-Hayy (الحي) The Ever Living One
64 Al-Qayyum (القيوم) The Self-Existing One 65 Al-Wajid (الواجد)
The Finder
66 Al-Majid (الماجد) The Glorious
67 Al-Wahid (الواحد) The One, the All Inclusive,
The Indivisible

68 As-Samad (الصمد) The Satisfier of All Needs
69 Al-Qadir (القادر) The All Powerful
70
Al-Muqtadir (المقتدر) The Creator of All Power
71 Al-Muqaddim (المقدم) The Expediter
72 Al-Mu'akhkhir (المؤخر) The Delayer
73 Al-Awwal (الأول) The First
74 Al-Akhir (الأخر) The Last
75 Az-Zahir (الظاهر) The Manifest One
76 Al-Batin (الباطن)
The Hidden One
77 Al-Wali (الوالي) The Protecting Friend
78 Al-Muta'ali (المتعالي) The Supreme One
79 Al-Barr (البر) The Doer of Good
80 At-Tawwab (التواب) The Guide to Repentance
81 Al-Muntaqim (المنتقم)
The Avenger
82 Al-'Afuww (العفو) The Forgiver
83 Ar-Ra'uf (الرؤوف) The Clement
84 Malik-al-Mulk (مالك الملك) The Owner of All
85 Dhu-al-Jalal wa-al-Ikram (ذو الجلال و الإكرام) The Lord of Majesty and Bounty
86 Al-Muqsit (المقسط) The Equitable One
87 Al-Jami' (الجامع) The Gatherer
88 Al-Ghani (الغنى) The Rich One
89 Al-Mughni (المغنى) The Enricher
90 Al-Mani'(المانع) The Preventer of Harm
91 Ad-Darr (الضار) The Creator of The Harmful
92 An-Nafi' (النافع) The Creator of Good
93 An-Nur (النور) The Light
94 Al-Hadi (الهادي) The Guide
95 Al-Badi (البديع) The Originator
96 Al-Baqi (الباقي)
The Everlasting One
97 Al-Warith (الوارث) The Inheritor of All
98 Ar-Rashid (الرشيد) The Righteous Teacher
99 As-Sabur (الصبور)
The Patient One

Read more ...