Thursday, July 4, 2013

কিছু বিভ্রান্তির জবাব


হানাফী মাযহাব নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি এবং তার জবাব...................

কিছু দিন আগে আমার একভাই আমাকে হানাফী মাযহাব সম্পর্কে তিনটি প্রশ্ন করেন এবং আমি আগেও দেখেছি যে, এই প্রশ্নগুলো নিয়ে অনেকেই বিভ্রান্তি ছড়িয়ে থাকেআমি তাকে যেভাবে উত্তর দিয়েছি সেভাবেই উত্তরটি কপি-পেষ্ট করে দিলাম

প্রশ্নগুলো হল.......

ইমাম আবু হানাফী রঃ এর জন্ম ৮০ হিঃ এবং মৃত্যু ১৫০ হিঃফিকাহ গ্রন্থ কুদরী লেখা হয় ৩৬২ হিঃইমাম আবু হানাফী রঃ এর ৪ জন প্রসিদ্দ ছাত্র ১)আবু ইউসুফ রঃ. ২)মুহাম্মাদ রঃ৩)ইমাম যুকারা রঃ. ৪)হাসান বিন জিয়াদ রঃ. । আমার প্রশ্ন আপনার কাছে :

 ১) ১৫০ হিঃ থেকে ৩৬২ হিঃ এর সনদ অর্থাৎ রাবী গুলার নাম বলবেন?

২) আবু ইউসুফ রঃ ও মুহাম্মাদ রঃ, ইমাম আবু হানাফী রঃ এর ২-৩ অংশ ফতুয়ার বিরধীতা করেন কেন ?

৩) ইমাম আবু হানাফী রঃ এর কোন হাদিস গ্রন্থ এর নাম বলেন যেটা থেকে অনার মতআমত পাওয়া যাবে

উত্তর....

আপনি বলেছেন,
ফিকাহ গ্রন্থ কুদরী লেখা হয় ৩৬২ হিঃ। .... ১৫০ হিঃ থেকে ৩৬২ হিঃ এর সনদ অর্থাৎ রাবী গুলার নাম বলবেন?

ভাই আপনার কুদুরীর সনদের প্রয়োজন হয়েছে কেন? আপনি কি মনে করেন, ফেকহে হানাফীতে প্রথম কুদুরী লেখা হয়েছে? এর আগে ও কিন্তু কিতাব লিখা হয়েছে
যেমন: ইমাম আবু হানিফার ছাত্র ইমাম মোহাম্মদ নিজেও অনেক কিতাব লিখেছেনসিয়র কবীর, সিয়রে সগীর, কুতুবুস্ সুন্নাহ (জাহেরুর রেওয়ায়াত) ৪জিয়াদাত ৫জামে কবীর ৬জামে সগীরসবচেয়ে বড় কথা হল ইমাম শাফী রা: ও ইমাম মোহাম্মদ থেকে হাদীস রেওয়ায়ত করেছেন

আপনি প্রশ্ন করেছেন
ইমাম আবু হানিফা রাহ: এর ছাত্রগণ ওনার বিরোধিতা করেছেন কেন?

সব মাছালাই বিরোধিতা করেনি, তবে যে সব মাছালাই ইমাম আবু হানিফার মতামতকে কোরান হাদিসের বিপক্ষে পেয়েছেন সেখানে বিরাধিতা করেছেনপরবর্তিতে ওলামাগণ দেখেছেন বিরোধিতা করলেও কোন কোন স্থানে ইমাম আবু হানিফার মতামত ঠিক ছিল, আবার কোন কোন জাগায় আবু ইউচুফ বা ইমাম মোহম্মদ রাহ: এর মতামত ঠিক ছিলযেখানে যার মতামত টিক ছিল সেখানে তার মতামতের উপর ফতওয়া দেয়া হয়েছেএকে বলা হয় হানাফীরা অন্ধ বিশ্বস করেনাআপনি কি বলেন আমরা অন্ধ বিশ্বাস করব এবং ভুল হলেও মেনে নেব?

আপনি বলেছেন,
ইমাম আবু হানাফী রঃ এর কোন হাদিস গ্রন্থ এর নাম বলেন যেটা থেকে অনার মতআমত পাওয়া যাবে

আমি প্রশ্ন করি হযরত আবু বকর ওমর ওসমান আলি রা: কোন হাদিসের কিতাব লিখেছেন যেখান থেকে কোন হাদিস জাল কোন হাদিস যইফ তা জানতে পারতামঅবশ্যয় লিখেননিওনারা যেকারনে লিখেন নি, সে কারনে ইমাম আবু হানিফাও লিখেন নি
কারণ টা কি?

ছাহাবা যুগ যাকে হাদীসে খায়রুল কুরুন বলেছে সে যুগে হাদীস জাল বা জঈফ হয়নি, যার কারণে হাদস সংকলনের প্রয়োজন দেখা দেয়নি বরং হাদীস উস্তাদ থেকে শুনে শুনে মুখস্থ রাখা হইতইমাম আবু হানিফা সেই যুগেরই মানুষ ছিলেনঅর্থাত উনি সাহবা এবং তাবঈদের থেকে হাদীস শিক্ষা গ্রহণ করেচেনপরের ‍যুগে যখন হাদিস জাল করা শুরু হয় তখন ইমাম আহমদ, ইমাম বোখারী প্রমুখ ব্যক্তি হাদীস সংকলনের কাজ শুরু করেন

হাদিস শরীফে আছে : মুসলিম শরীফের রেওয়ায়াত
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : ( لا تَكْتُبُوا عَنِّي وَمَنْ كَتَبَ عَنِّي غَيْرَ الْقُرْآنِ فَلْيَمْحُهُ وَحَدِّثُوا عَنِّي وَلا حَرَجَ ... ) رواه مسلم
হুযুর পাক সা: বলেন: তোমরা আমার থেকে কোরান অন্য কিচু লিখবেনাযদি লিখে থাক তাহলে মুছে ফেলকিন্তু আমার থেকে রেওয়ায়াত কর
এই হাদিসে কোরান ছাড়া অন্য কিছু লিখতে নিষেধ করা হয়েছেএর উপর ছাহাবাগণ আমল করেছেন, ইমাম আবু হানিফাও আমল করেছেন

উনারা হাদিসের উপর আমল করাতে আপনার কোন অসুবিধা হইলে জানাবেন

ইমাম আবু হানিফা রাহ: নিজে কোন কিতাব লিখেননি সংকলনের কাজে ব্যস্ত থাকার কারনেতবে ওনার ছত্ররা ওনার রেওয়ায়ত সমুহ একত্রিক করেছেন
যেমন :
1الفقه الأكبر، برواية حماد بن أبي حنيفة
لفقه الأكبر، برواية أبي مطيع البلخي(2)
العالم والمتعلم، برواية أبي مقاتل السمرقندي(3)
رسالة الإمام أبي حنيفة إلى عثمان البتي(4)
الوصية، برواية أبي يوسف(5)

 ...........................................................................................................
পাঠকরা যদি ইচ্ছা করেন তবে উক্ত প্রশ্নগুলো সাধারনত যারা করেন আপনারা তাদের সম্পর্কেও জানতে পারেন.....

http://www.peaceinislam.com/asksumon007/11623/

6 comments:

  1. হুযুর পাক সা: বলেন: তোমরা আমার থেকে কোরান অন্য কিচু লিখবেনা। যদি লিখে থাক তাহলে মুছে ফেল। কিন্তু আমার থেকে রেওয়ায়াত কর। এই হাদিস ছাড়া সহীহ আরও তো হাদিস আছে যা দ্বারা প্রমানিত যে রাসুল (সা) সাহাবীদের কে হাদিস লিখে রাখতে অনুমতি দিয়েছেন । তাছাড়া ইমাম আবু হানিফা তো আর সাহাবী ছিলেন না । তার কিতাব লিখতে সমষ্যা কি ছিল ?

    ReplyDelete
    Replies
    1. জনাব পুরোটা পড়েছেন কি ???

      ইমাম আবু হানিফা রাহ: নিজে কোন কিতাব লিখেননি সংকলনের কাজে ব্যস্ত থাকার কারনে। তবে ওনার ছত্ররা ওনার রেওয়ায়ত সমুহ একত্রিক করেছেন।
      যেমন :
      1। الفقه الأكبر، برواية حماد بن أبي حنيفة
      لفقه الأكبر، برواية أبي مطيع البلخي(2)
      العالم والمتعلم، برواية أبي مقاتل السمرقندي(3)
      رسالة الإمام أبي حنيفة إلى عثمان البتي(4)
      الوصية، برواية أبي يوسف(5)

      Delete
  2. ওমর(রা)উসমান(রা) যে কারনে বই লেখেননি আবু হানিফাও সেকারনে বই লেখেন নি। ত আবু বকর মাজহাব নেই, ওমর মাজহাব নেই, ত হানাফি মাজহাব এল কি করে।
    কানাকে হাইকোট দেখাচ্ছ?

    ReplyDelete
    Replies
    1. ভাই অাপনারা দলাদলি রাখুন; ইমাম আবু হানিফা (রঃ) বলেন নাই যে আমার মতামত মানা ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত, মুস্তাহাব, মুবা......। তিনি একটা মতামত দিয়েছেন কোরআন বুঝাতে বা বুঝতে, তখন তার সামনে ইন্টারনেট, সিডিতে লক্ষ লক্ষ হাদিস ছিলনা---তাদের সামনে ছিয়া-সেত্তা হাদিস ছিলনা। আজ অামরা যারা নিজেদের কে পন্ডিত মনে করতেছি; তা সম্ভব হয়েছে একমাত্র পূর্ববত্রী ঈমাম গণদের জন্য। আর পরবর্তীতে তাদের ছাত্ররা তাদের মতামতগুলো প্রচার করেছেন। কিন্তু আজ আমরা এগুলো নিয়ে ফ্যাতনা সৃষ্টি করছী; আর অ-মুসলীমদের মনোবাঞ্চা পূরণ করছি। অামরা একে অপরের দোষে দোষান্বিত হচ্ছি। অাল্লাহ পাক অামাদের সকল অাত্ম-গরীমাকে ধূলায় মিশিয়ে; সকলকে ইসলামের খেদমত করার তৌফিক দান করুন---অামীন।

      Delete
    2. abdur rafi
      ভাই, দ্বীনি বিষয়ে একটি পড়াশুনা করে কথা বললে ভাল হয় না ?
      ইমাম বুখারীর খাস ওস্তাদ সাহাবাদের মাযহাব সম্পর্কে কি বলেছেন তা একটু জেনে নিন...

      Delete
  3. Shakirul Islam... ভাই আপনাকে ধন্যবাদ এই সুন্দর জবাবের জন্য।

    ReplyDelete